ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ প্যাভিলিয়ন


অনলাইন জিডি (হারানো এবং প্রাপ্তি)

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ০৩টি থানায় এবং বাংলাদেশের সকল জেলা পুলিশ ইউনিটসমূহের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী মডেল থানা ও ভালুকা মডেল থানায় অনলাইন জিডি (হারানো এবং প্রাপ্তি) কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে। পর্যাক্রমে বাংলাদেশের সকল থানায় এই সেবা শুরু হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে শুধুমাত্র হারানো এবং প্রাপ্তির ক্ষেত্রেই অনলাইনে জিডি করা যাচ্ছে। নাগরিকবৃন্দ বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তে বসেই অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে QR Code সম্বলিত জিডির কপি পেয়ে যাচ্ছেন। এতে করে নাগরিকবৃন্দের TCV (Time, Cost, Visit) সাশ্রয় হচ্ছে। অনলাইনে জিডি করার পদ্ধতি সমূহ নিন্মে বর্ণনা করা হলো


অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রত্যাশী নাগরিকবৃন্দ পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে অনলাইনে নিবন্ধন পূর্বক আবেদননের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে QR Code সম্বলিত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ পুলিশের এই সেবা পেতে যে কেউ নিজের এবং অন্যের পক্ষে আবেদন করতে পারবে। অনলাইনে গৃহীত আবেদনটি পেমেন্ট ভেরিফিকেশন এবং যাচাই বাচাই সাপেক্ষে ০৭ দিনের মধ্যে আবেদনকারীর হাতে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এতে করে নাগরিকবৃন্দের TCV (Time, Cost, Visit) সাশ্রয় হচ্ছে।
জেলা পুলিশ, ময়মনসিংহ কর্তৃক ২৪/০৬/২০২০ খ্রিঃ পর্যন্ত ২৬,৭৯৮ জন নাগরিককে অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সেবা প্রদান করা হয়েছে।
নিন্মে অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের জন্য আবেদনের নিয়মাবলী উল্লেখ করা হলোঃ-


বিডি পুলিশ হেল্পলাইন অ্যাপস

বিডি পুলিশ হেল্পলাইন অ্যাপস ব্যবহার করে যে কোন ব্যক্তি যে কোন সময় নিজের পরিচয় গোপন রেখে (যদি তিনি চান) পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহায়তা সহ যে কোন বিষয়ে পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। নাগরিক কর্তৃক প্রেরিত তথ্যটির বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে একই সময়ে থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পর্যন্ত উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন পর্যবেক্ষন করে থাকেন। নিম্মে বিডি পুলিশ হেল্পলাইনে তথ্য প্রদানের নিয়মাবলী উল্লেখ করা হলোঃ

ডাউনলোড লিঙ্কঃ


জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯

৯৯৯ জরুরী সেবা বাংলাদেশ পুলিশের অধীনে পরিচালিত একটি কর্মসূচি যা নাগরিকের জরুরী প্রয়োজনে সম্পূর্ণ টোল ফ্রি ভাবে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস প্রদান করে থাকে। সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা চালু রয়েছে এই সেবা। যে কোন মোবাইল নম্বর থেকে সম্পূর্ণ টোল ফ্রি কল করে বাংলাদেশের নাগরিকরা জরুরি মূহূর্তে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ বা এ্যাম্বুলেন্স সেবা পাবেন। ৯৯৯ সার্ভিসের প্রশিাক্ষিত পুলিশ সদস্যরা জরুরি মূহূর্তে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ বা এ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদানকারী সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন।

ই-ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ POS মেশিন ব্যবহার করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্রাফিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে প্রসিকিউশন দাখিল ও জরিমানা আদায় শুরু করেছে। ফলে চালক/জরিমানা প্রদানকারী দ্রুত সময়ে এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সহজেই জরিমানার অর্থ প্রদান করতে পারছেন। পূর্বে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে রুজুকৃত প্রসিকিউশনের ক্ষেত্রে ব্যাংকে জরিমানার টাকা প্রদান পূর্বক ট্রাফিক অফিসে যেয়ে মামলা নিষ্পত্তি করার ঝামেলা বর্তমানে প্রচলিত POS মেশিনের মাধ্যমে প্রসিকিউশনের ক্ষেত্রে নেই। এক্ষেত্রে প্রসিকিউশন রুজুর স্থানেই এটি নিষ্পত্তি করার সুযোগ রয়েছে।

সিসি ক্যামেরা নেটওয়ার্ক

অপরাধ দমন ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জেলা পুলিশ ময়মনসিংহ কর্তৃক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন সিসি ক্যামেরা নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরা কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ২৪ টি মনিটরের সমন্বয়ে ০১টি ভিডিও ওয়াল/LFD ( Large Format Display) দ্বারা ২৪/৭ দক্ষ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যার ফলে অপরাধ দমন সহ অপরাধ সংগঠিত হওয়ার দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধী সনাক্তকরণ সম্ভব হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা পূর্বক উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে।

নাগরিক তথ্য নিবন্ধন(CIMS)

জঙ্গিবাদ নিরসনে বাংলাদেশ পুলিশের Zero Tolerance নীতি বাস্তবায়নে জেলা পুলিশ, ময়মনসিংহ ইতোমধ্যে নাগরিক তথ্য নিবন্ধন বা CIMS (Citizen Information Management System) কার্যক্রম শুরু করেছে। ২৪/০৬/২০২০ খ্রিঃ পর্যন্ত ১২,৮১,০৩৬ জন নাগরিকের তথ্য নিবন্ধন করে জেলা সমূহের মধ্যে ১ম স্থানে অবস্থান করছে জেলা পুলিশ, ময়মনসিংহ। নিবন্ধনকৃত নাগরিকের মধ্যে বাড়ীওয়ালা ১২,৪৩,৫৫২ জন ভাড়াটিয়া ৩০,৪২৭ জন এবং মেস মেম্বার ৭,০৫৭ জনের তথ্য নিবন্ধন করা হয়েছে। উল্লেখিত তথ্যসমূহ জঙ্গিবাদ ও অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নিম্মে নিবন্ধিত নাগরিকসহ প্রথম ১০টি থানার অবস্থান উল্লেখ করা হলো।

কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব রোধে জেলা পুলিশ ময়মনসিংহের ভূমিকা

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনার আলোকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে, মাননীয় আইজিপি মহোদয়ের সুনিদির্ষ্ট আদেশে ও রেঞ্জ ডিআইজি মহোদয়ের দক্ষ তদারকিতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। এই সংকটকালে জনসাধারণকে যেকোন মূল্যে নিরাপদ রাখার মহান শপথ নিয়ে কোন রকম পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই লড়াই শুরু করে জেলা পুলিশের প্রতিটি গর্বিত সদস্য। তারা আরেকবার প্রমাণ করে নিজেদের বীরত্ব যেভাবে তারা প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে। এই মহতী কর্মযজ্ঞে সামনে থেকে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন ময়মনসিংহ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোহাঃ আহমার উজ্জামান পিপিএম-সেবা মহোদয়।

COVID-19 প্রতিরোধে জেলা পুলিশ ময়মনসিংহের উল্লেখযোগ্য কর্মসূচী সমূহঃ-

  • করোনা ভাইরাস রোধে সচেতনতামূলক লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ।
  • জেলা পুলিশের প্রতিটি সদস্যকে সচেতন করাসহ প্যানডেমিক পুলিশিং সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
  • সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাইকিং, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং বাজার এলাকায় গোলাকার বৃত্ত অঙ্কন।
  • গনমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সচেতনতামূলক গান, বক্তব্য ও ভিডিও প্রচার।
  • মসজিদ, মন্দির, বাজার সহ সর্বত্র জনগনকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করা।
  • জেলার এবং জেলা সদরের প্রবেশ মূখে চেকপোষ্ট স্থাপনের মাধ্যমে জনসাধারনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা।
  • কৃষি শ্রমিক, পণ্য এবং রোগী পরিবহনে সহায়তা প্রদান।
  • পুলিশের স্থাপনাসমূহে জীবানুমুক্তকরণ কর্মসূচি।
  • করোনা আইসোলেশন সেন্টারের নিরাপত্তা প্রদান সহ COVID-19 এ আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির জানাযা এবং সৎকারে নিরাপত্তা প্রদান।
  • ডাক্তার, চিকিৎসাকর্মী এবং সাংবাদিকবৃন্দকে সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান।
  • সরকারী ও ব্যক্তি উদ্যেগে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে সহায়তা ছাড়াও পুলিশ সদস্যদের নিজ বেতন ও রেশনের টাকায় ত্রাণ সহায়তা প্রদান।
  • বেদে, হিজরা, ছিন্নমূল, নাপিত, দৃষ্টি প্রতিবন্ধি, ভাসমান, হতদরিদ্র, মিস্ত্রি, হকার, মাঝি, মুদ্রণ কর্মচারী, দোকান কর্মচারী, ডেকোরেটর কর্মী, এতিমসহ প্রকৃত দরিদ্রকে চিহ্নিত করে ত্রাণ সহায়তা প্রদান।
  • ত্রাণ গ্রহনে যাদের চক্ষু লজ্জা আছে তাদেরকে সহায়তা করতে হটলাইন নম্বর চালু এবং তাদের বাড়ীতে ত্রাণ পৌছানো।
  • জেলা পুলিশ কর্তৃক ৫,২৬৫ টি পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা এবং ৭০০ জনকে রান্না করা খাবার প্রদান।
  • গরীব ও অসহায় মানুষের কল্যাণে স্বাচিপের সাথে যৌথ উদ্যেগে ভ্রাম্যমান চিকিৎসা সেবা প্রদান।

পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসুরক্ষার ব্যবস্থা করা সত্বেও জেলা পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রাক্ত হয়। পুলিশ সুপার মহোদয় সার্বক্ষণিক আক্রান্ত সদস্যদের পাশে থেকে মানসিক সমর্থন, চিকিৎসা ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ায় দ্রুততম সময়ে সুস্থ্য হয়ে কাজে যোগ দেয় আক্রান্ত সদস্যরা। এই সংকট মোকাবেলায় শুরু থেকেই আন্তরিকতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। সামনের দিনেও আমরা একই রকম অঙ্গীকার ও দায়বদ্ধতা নিয়ে জনগণের পাশে থেকে দায়িত্ব পালন করে যাবো।